গত কয়েক বছরে গৃহযুদ্ধের অন্ধকারে নিমজ্জিত মিয়ানমার। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর যুদ্ধের তীব্রতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার ইস্যুতে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব উন্মোচিত হচ্ছে।
মিয়ানমারে চীনের প্রভাব দীর্ঘকাল ধরে বিদ্যমান। তবে, মার্কিন প্রশাসন সেখানে চীনের প্রভাব কমাতে মরিয়া। সম্প্রতি চীন সতর্ক করেছে যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে বাইরের হস্তক্ষেপ বাড়ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতকে আরো জটিল করে তুলেছে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে গণতন্ত্রপন্থিরা প্রায় নিঃশেষিত। গৃহযুদ্ধের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রপন্থিদের সমর্থন বাড়াচ্ছে, যা চীনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মিয়ানমারে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আগামী ১৬ আগস্ট, লাওস, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এখানে চীন ‘বহির্দেশীয় হস্তক্ষেপ’কে সীমালঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে। যদিও ওয়াং ই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি, তার মন্তব্যকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ইঙ্গিত হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মিয়ানমারের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন এবং অসামরিক সরকারের পুনরুদ্ধারের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এতে পরিষ্কার হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থন করছে।
চীনের মিয়ানমারে কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে, যা তার অর্থনৈতিক বিনিয়োগ এবং ভারত মহাসাগরের প্রবেশপথের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে, যা তার জন্য উপকারী।
চীন বলছে, বাইরের শক্তি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই শান্তি ও স্থিতিশীল মিয়ানমার দেখতে চায়, তবে সামরিক সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব বজায় থাকলে এটি সম্ভব হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। চীনের দীর্ঘকালীন সমর্থন সামরিক সরকারকে শক্তিশালী রেখেছে, যা পশ্চিমা রাষ্ট্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও চলমান রয়েছে।