রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় হামলা করে গুলি ও অস্ত্র লুটের অভিযোগে গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আসামিদের আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, মামলার অন্যান্য আসামিরাও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। গোদাগাড়ী থানার মামলা নং-৩ তাং-৩/৯/২০২৪।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে নাসিমসহ ৪০ জন এবং অজ্ঞাত ৬০০-৭০০ জন দেশীয় অস্ত্রসহ গোদাগাড়ী থানার প্রধান ফটকের সামনে হাজির হন। আসামিরা ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং পুলিশের তিনটি গাড়িসহ আরও ৫-৬টি গাড়ি ভাঙচুর করে। তারা থানার মূল ভবনে ঢুকে অস্ত্রাগার ভেঙে গুলি ও অস্ত্র লুট করে।
প্রাণের ভয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ছাদের ওপর আশ্রয় নেন এবং সেখান থেকে রক্ষা পান। কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালানোর পর হামলাকারীরা থানা ত্যাগ করেন। এজাহারে বলা হয়েছে, হামলার নেতৃত্ব দেন রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।
নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৫ আগস্টের ঘটনার পর গোদাগাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন, যা তদন্ত করছেন থানার আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার। আলোচিত মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমকে। এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা মিলে থানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে মো. নাসিমকে গোদাগাড়ীর হাটপাড়া ভগবন্তপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইতোমধ্যে আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছেন আদালতে।
তবে নাসিমের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস দাবি করেন, নাসিম ৩ আগস্ট চিকিৎসার জন্য ভারতে যান এবং ১৩ আগস্ট দেশে ফিরে আসেন। তার ভারতে থাকা সংক্রান্ত হাসপাতালের নথিপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত শুনানি শেষে মামলার বাদীকে উপস্থিত হতে নির্দেশ দিয়েছেন, এবং রোববার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
মামলায় বাঘার আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শহীদুজ্জামান শাহিদ, সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম, বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মণ্ডলসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের ২ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার দিন ভারতে থাকা ব্যক্তি কীভাবে হামলায় অংশ নিলেন, এমন প্রশ্নে মামলার বাদী এসআই মো. রেজাউল করিম বলেন, “ঘটনার সময় অনেক লোক ছিল। আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের নাম পেয়েছি। এতে ভুল হতে পারে, তবে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।”