চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ইকোনমিক জোন পরিদর্শন

সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় কোরিয়ান ইপিজেডে পৌঁছায় প্রতিনিধিদলটি। এ সময় তারা কারখানার কার্যক্রম ও পরিদর্শন কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নেন

Last modified: April 7, 2025

চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জোন পরিদর্শন

বৈশ্বিক বিনিয়োগ সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫ উপলক্ষে চট্টগ্রামের দুটি ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করেছেন বিদেশী বিনিয়োগকারীরা।

সোমবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ এর প্রথম দিনে এই কর্মসূচি নেয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

৪০টি দেশের ৬৪ জন বিনিয়োগকারী আনোয়ারা ও মিরসরাই দুটো ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মাঠ পর্যায়ের সার্বিক চিত্র দেখে আশার কথা জানিয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। নানা সীমাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের সদিচ্ছাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তারা।

চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জোন পরিদর্শন

পরিদর্শনে আসা এক বিনিয়োগকারী বলেন,

‘আমি মনে করি বাংলাদেশে এখনই বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। এখানে বিনিয়োগের সুবিধা অনেক বেশি।’

এদিকে, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ তৈরি করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার বদ্ধ পরিকর বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জুলাই বিপ্লবের পর বদলে যাওয়া নতুন বাংলাদেশে বিনিয়োগ কতটা সম্ভাবনাময় তা তুলে ধরতেই চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এ সফর। দিনব্যাপী চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, নেদারল্যান্ডসহ ৪০টি দেশের ৬৪ জন বিনিয়োগকারী ঘুরে দেখেন বিনিয়োগের এসব স্থান।

চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জোন পরিদর্শন

এ সময় কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শনের পাশাপাশি বিনিয়োগে আগ্রহীরা নিজ চোখে ঘুরে দেখেন কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ, কর্মপদ্ধতি, নতুন কারখানা স্থাপনের স্থান, চিকিৎসা সুবিধা সহ নানান দিক ।

তুলে ধরা হয় বাংলাদেশে বিনিয়োগের চিত্র ও সম্ভাবনা। বিনিয়োগে আগ্রহী করতে নানা সুযোগ সুবিধাও তুলে ধরা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে আগত এসব বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের।

চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জোন পরিদর্শন
ইয়াংওয়ান কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং

 

এসময় ইয়াংওয়ান কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং বলেন,

‘চট্টগ্রামে বিনিয়োগের যে সুযোগ-সুবিধা তা বিনিযোগকারীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এবং বিদ্যমান পরিবেশে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।’

কোরিয়ান ইপিজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন,

‘আমরা কোরিয়ান ইপিজেড বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, তারা আসুক, দেখুক, পরিদর্শন করুক বাংলাদেশের ইপিজেডগুলো কী রকম।’

কোরিয়ান ইপিজেড ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনসহ বিনিয়োগের সার্বিক চিত্র সরেজমিন দেখতে পেয়ে খুশি বিনিয়োগে আগ্রহীরা। বিনিয়োগের পরিবেশ দেখে বিনিয়োগ করা নিয়ে আশার আলো দেখছেন বিনিয়োগকারীরা।

 

এদিকে, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট এর মাধ্যমে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে বিশ্ব দরবারের বাংলাদেশকে তুলে ধরাই লক্ষ্য বলছেন আয়োজকরা।

বেজার পরামর্শক মো. আবদুল কাদের খান বলেন,

‘এখানে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির কী ধরনের সহজলভ্যতা আছে তা বিনিয়োগকারীরা পরিদর্শন করতে আসছে। আমাদের বিশ্বাস কোরিয়ান ইপিজেডের যে বর্তমান অবস্থা তা দেখে বিনিয়োগকারীরা আগামীতে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাবে।’

বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনে চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগ কারীদের জন্য সরজমিনে দেখার এমন আয়োজন সারাবিশ্বের মনযোগ আকর্ষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড এর কার্যক্রম ১৯৯৫ সালে শুরু হয়। প্রথমে দুই দেশের সরকার উদ্যোগ নিলেও কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান গ্রুপ শিল্পাঞ্চলটি গড়ে তোলে বেসরকারিভাবে।

এই ইপিজেডের ৫২ শতাংশ জমি বনায়ন ও পরিবেশের জন্য নির্ধারিত। ফলে এটিকে বড় পরিবেশবান্ধব ইপিজেড বলা হয়।

Post date: April 7, 2025

Last modified: April 7, 2025