বুধবার (৯ এপ্রিল) রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন। তিনি লিখেছেন,
‘চীন বিশ্বের বাজারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার যে ঘাটতি দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করছি। এটা তাৎক্ষণিক কার্যকর হবে।’
ট্রাম্প লিখেছেন,
‘৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এসব প্রতিনিধির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআর (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) রয়েছে।
দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রার মানে কারসাজি ও অশুল্ক বাধাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছে।’
এ পরিপ্রেক্ষিতে চীন বাদে অন্য সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট লিখেছেন,
‘আমি ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত অনুমোদন করেছি। একই সঙ্গে এ সময়ের জন্য পাল্টা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। এটাও তাৎক্ষণিক কার্যকর হবে।’
ট্রাম্পের ঘোষণার পর হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। তিনি বলেন, যেসব দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেনি, সেসব দেশ পুরস্কৃত হবে। ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের আওতায় থাকবে মেক্সিকো ও কানাডাও।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী বলেন,
‘আমি এটাকে বাণিজ্যযুদ্ধ বলব না। অবশ্য চীন এটা উসকে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই স্থগিতাদেশ আলোচনার জন্য আমাদের সময় দেবে। আরও দেশ যোগাযোগ করবে বলে আশা করছি।’
এর আগে ২ এপ্রিল ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১৯৫০-এর দশকে সূচক চালুর পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়ে।
এ অস্থিরতায় মার্কিন ট্রেজারি বন্ডেও বড় ক্ষতি হয়। বিনিয়োগকারীদেরকে এমনকি তাদের নিরাপদ সম্পদও বিক্রি করে ফেলতে দেখা যায়। অন্য বড় মুদ্রাগুলোর তুলনায় ডলারও দুর্বল হয়ে পড়ে।
বাজারের এমন বিপর্যয়কে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না ট্রাম্প। বরং তিনি শুল্ক আদৌ স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধা তৈরি করেন। তিনি কখনো এ পারস্পরিক শুল্ককে ‘স্থায়ী’ বলেছেন, আবার দাবি করেছেন—এ শুল্ক বৈশ্বিক নেতাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য করছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ভোটার, রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যে, এসব শুল্কহার আলোচনা সাপেক্ষে পরিবর্তনযোগ্য। তবে প্রশাসন এও স্বীকার করেছে, এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
তবে বুধবার চীন ছাড়া বেশিরভাগ দেশের জন্য ঘোষিত ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক আগের ০.৭ শতাংশ ক্ষতি কাটিয়ে ৫.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ২ হাজার পয়েন্ট বা ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচক বেড়েছে ৬.৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার ৯.২ শতাংশ বৃদ্ধির পর পিবডির শেয়ার আরও ৩.৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে বছরের হিসাবে এটি এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাসে রয়েছে।