ইফতার মানে বারকোড

ইফতারে সন্তুষ্টি মানেই বারকোড

Last modified: March 10, 2025

ইফতার মানে বারকোড

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসমা আক্তার এসেছেন মুরাদপুর বারকোড ফুড জাংশানে। বাবাকে নিয়ে প্রায়ই আসেন এখান থেকে ইফতার নিতে। নানা স্বাদের জুস আর ঝাল আইটেম পছন্দ তার। জানালেন, রমজানে অনেক জায়গা থেকে ইফতার কেনেন। কিন্তু খাবারের স্বাদ আর মানের জন্য বারকোড তার প্রথম পছন্দ।

আসমা আহমেদের মত ঝাল আইটেম খুব পছন্দ না হলেও ব্যবসায়ী আজমল হোসেনেরও একই মত। রমজানে ইফতার মানে বারকোড। মুরাদপুর শাখায় বেশি আসেন ঠিকই। তবে বন্দরনগরীর এই বিখ্যাত ফুড চেইন শপের অন্যান্য শাখা থেকেও নিয়মিত ইফতার আইটেম নেন তিনি। ফিরনি, কাবাব প্লেটার তার পছন্দের শীর্ষে।

ইফতার মানে বারকোড
ভালোবাসার ইফতারে আছে দুইশ’র বেশি আইটেম

বারকোডে ভালোবাসার ইফতার, আছে দুইশ’র বেশি আইটেম

চট্টগ্রামের স্বনামধন্য রেস্টুরেন্ট বারকোড। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গ্রাহকদের চাহিদানুযায়ী সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। বারকোডের ইফতার আয়োজন নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের ফাউন্ডার মঞ্জুরুল হক বলেন,

‘আমাদের ইফতার আয়োজন প্রতি বছর ই ভালোই যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ। গ্রাহকদের সেবা দিতে পেরে আমরা খুশি। প্রতিদিন শতশত মানুষ আসেন ভালোবাসার এই ইফতার কিনতে। ভিড় থাকলে আমরাও তা উপভোগ করি।’

তিনি আরও জানান,

‘রমজানের ইফতার আমাদের জন্য স্পেশাল। আমরা দুইশ’র বেশি ইফতার আইটেম প্রদর্শনী করে থাকি। যে যেভাবে পারেন নিজেদের পছন্দনুযায়ী নিয়ে থাকেন।

’এবছর স্পেশাল কিছু নেই। আমাদের টার্গেট থাকে একই রকমের ইফতার তৈরি করার। তবে ফ্লেভারের দিক দিয়ে কিছুটা ভিন্নতা নিয়ে আসি। যেমন, চাইনিজ, জাপানিজ, কোরিয়ানসহ বিদেশি ফুড গুলোর ফ্লেভারের ভিন্নতা থাকে।’

-বলেন মঞ্জুরুল হক।

বারকোডের স্পেশাল হালিম

সবচেয়ে স্পেশাল ইফতার সম্পর্কে জানতে চাইলে বারকোডের প্রধান নির্বাহী পরিচালক কিং মারমা বলেন,

‘আমাদের স্পেশাল ফুড হল ‘হালিম’। এটাই ক্রেতাদের সবচেয়ে আগ্রহের খাবার৷ রমজান আসলেই এর চাহিদা বেড়ে যায়। আমরাও চেষ্টা করি হালিমের গুনগত মান ঠিক রাখার। তবে আমাদের সব খাবারই স্পেশাল রাখার চেষ্টা করি।’

ইফতার মানে বারকোড
পছন্দনুযায়ী ইফতার কেনার জন্য ক্রেতাদের ভীড় লেগেই থাকে।
বারকোডে সাহ্‌রির আয়োজন

সাহ্‌রির আয়োজন সম্পর্কে কিং মারমা বলেন,

‘চতুর্থ রমজান থেকেই আমরা সাহ্‌রির ব্যবস্থা করেছি। ক্রেতাদের সাড়াও বেশ ভালো। প্রতিদিন পাঁচশ’র বেশি ক্রেতা আসেন বারকোডে। তবে সাহ্‌রির দিক দিয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। আমাদের ১৫০ এর অধিক কর্মচারী আছে। যারা তাদের শিফট অনুযায়ী কাজ করেন।’

ইফতার মানে বারকোড
বারকোডে সাহ্‌রির আয়োজনেও রয়েছে ভিন্নতা।

আছে মেজবানের মাংসের চাহিদা

বারকোডের ইফতারি আইটেম সম্পর্কে প্রধান নির্বাহী পরিচালক কিং মারমা বলেন,

‘ইফতারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার তো আছেই সাথে আমরা ইতালিয়ান, চাইনিজ, জাপানিজ, চিকেন এর বিভিন্ন আইটেম, মেজবানি হালিম, মেজবানি মাংস, জিলাপি, মিষ্টি, দই, হালুয়া ইত্যাদি পরিবেশন করে থাকি। সারা বছরের মত রমজানেও আছে মেজবানের মাংসের বিপুল চাহিদা।’

ইফতার মানে বারকোড
সারা বছরের মত রমজানেও আছে মেজবানের মাংসের বিপুল চাহিদা।

আট রকমের বিরিয়ানি

’আমাদের আট রকমের বিরিয়ানি আছে। যার মধ্যে তেহেরি সবচেয়ে স্পেশাল। এটি বানানো হয় কম। কারণ সময় নিয়ে বানানো হয়। এখানে আমরা খাঁটি সরিষা ব্যবহার করে থাকি। পাশাপাশি মেজবানি, মাটন দম বিরিয়ানি,কাচ্ছি, বিফ দম বিরিয়ানি ইত্যাদি পরিবেশন করে থাকি। গ্রাহকরাও বেশ সাড়া দেয়।’

-বলেন কিং মারমা।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতারের আয়োজন নিশ্চিত করা হয়।

গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের দিক সবার আগে

‘গ্রাহকদের স্বাস্থগত দিকটা আমরা ভালোভাবেই খেয়াল রাখি। আমাদের তৈরিকৃত জিলাপিতে তেলের পাশাপাশি ঘি দিয়ে থাকি। আর আমাদের অধিকাংশ পণ্য আসে বাইরে থেকে। যেমন থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, ইতালি। আমরা সব খাবার একসাথে রান্না করিনা। একটা স্লট শেষ হলে আবারও রান্না বসাই। বিক্রি না হলে রেখে দিব সে মানসিকতা আমাদের নেই। তাই আমরা খাবারের গুনগত মান খুব ভালোভাবেই দেখি এবং স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করি’

-বলেন কিং মারমা।

ইফতার মানে বারকোড
জিলাপিকে আরও মুখরোচক করে তুলতে তেলের পাশাপাশি ঘি ব্যবহৃত হয়।

স্পেশাল গিফট বক্স

কিং মারমা বলেন,

‘আমাদের এই বারকোড ফুড জাংশনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঝাল জাতীয় খাবার। যার মধ্যে যার কাবাব, জাপানিজ ফুডস আর হালিম। এরাবিয়ান ফুডের মধ্যে ‘মাহালাবিয়া’ অন্যতম। পাশাপাশি জুসের মধ্যে ত্রিশের অধিক ভেরিয়েন্ট আছে৷ বিভিন্ন প্রকারের লাচ্চি, মিল্কশেক, লেমন দিয়ে থাকি।’

বারকোডে জুসের মধ্যে রয়েছে ত্রিশের অধিক ভেরিয়েন্ট।

 

কুরিয়ার করার ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,

‘আমাদের নিজস্ব কুরিয়ার সার্ভিস আছে- বিআরজি ( বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপ)। যার মাধ্যমে আমরা হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি। পাশাপাশি অন্যান্য সার্ভিসের সাথেও আমাদের চুক্তি আছে।

‘এবছর আমাদের স্পেশাল সার্ভিস হচ্ছে ‘গিফট বক্স’। এই বক্সে চাইলে যে কেউ ইফতারি আইটেম দিয়ে গিফট করতে পারে। সর্বোচ্চ বড় বক্স ৬হাজার টাকা এবং ছোট বক্স ৩৫০০টাকা। ক্রেতাদের দারুন সাড়া পাচ্ছি এই সার্ভিসে।’
ইফতার মানে বারকোড
এবছরের স্পেশাল আয়োজন ‘গিফট বক্স’।

 

বারকোড ফুড জাংশন এর ফাউন্ডার মঞ্জুরুল হক বলেন,

‘আমাদের ১৭ টি শাখা আছে। সব শাখাতেই আমরা ভালো সার্ভিস দিচ্ছি বলেই গ্রাহকের আশার জায়গা এই বারকোড। তাদের সন্তুষ্টি মানেই আমাদের খুশি।’

 

প্রতিবেদক
তাওরাত তানিজ
দ্য বিজনেস চট্টগ্রাম

Post date: March 7, 2025

Last modified: March 10, 2025